বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ই কিংবদন্তী অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ আমেরিকায় থাকেন। কারণ সেখানে তার স্ত্রী তাহিরা দিল আফরোজ ও একমাত্র মেয়ে ডা. রুবায়না জামান থাকেন। তাই স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে প্রায় সময়ই রাইসুল ইসলাম আসাদকে আমেরিকায় যেতে হয়। আবার যখন দেশে থাকেন তখন চেষ্টা করেন নাটক টেলিফিল্মে অভিনয় করতে। তবে বর্তমান সময়ের নাটকগুলোতে বাবা মায়ের চরিত্রের খুব কম উপস্থিতি বলে রাইসুল ইসলাম আসাদের মতো গুণি অভিনেতাকে মাসের প্রায় বেশিরভাগ সময়ই শুটিংবিহীন সময় কাটাতে হয়।
ভিন্ন চ্যানেলে দুই নাটক
বর্তমানে রাইসুল ইসলাম আসাদ অভিনীত দুটি নাটক দুটি ভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। একটি রহমতুল্লাহ তুহিনের ‘নিউইয়র্ক থেকে বলছি’ অন্যটি নজরুল ইসলাম রাজুর ‘ঘরে বাইরে’। নাটক দুটি যথাক্রমে দীপ্ত টিভি এবং মাছরাঙ্গা টিভিতে প্রচার হচ্ছে। এদিকে রাইসুল ইসলাম আসাদ আরো দুটি নতুন ধারাবাহিকের কাজ করছেন। একটি রোকেয়া প্রাচীর ‘সোনালী দিন’ এবং অন্যটি ভুবনের ‘দি ঢাকা এক্সপ্রেস’।
আজ আসাদের জন্মদিন
এদিকে আজ রাইসুল ইসলাম আসাদের জন্মদিন। তবে জন্মদিন উপলক্ষ্যে নেই বিশেষ কোন আয়োজন। নিজের মতো করেই নিজ বাসায় সময় কাটাবেন তিনি। রাইসুল ইসলাম আসাদ বলেন, ‘জন্মদিন উপলক্ষে একটি চ্যানেলে যাবার কথা ছিলো। কিন্তু গত কয়েকদিনে গরমে শুটিং করে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছি। তাই জন্মদিনে ঘর থেকেও বের হবার কোন ইচ্ছে নেই। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আল্লাহ সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন।’
গন্তব্য কলকাতা
এদিকে রাইসুল ইসলাম আসাদ শিগগিরই কলকাতায় যাবেন বলেও জানান। সেখানে মঞ্চে এবং সিনেমায় অভিনয় করার কারণে সেখানেও তার বেশ কয়েকজন বন্ধু বান্ধব আছে। তাদের সঙ্গে দীর্ঘ দশ বছর দেখা নেই। কারণ সর্বশেষ তিনি কলকাতা গিয়েছিলেন ২০০৮ সালে। এরপর আর কলকাতা যাওয়া হয়নি। গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পর ডাবিং-এর জন্য কলকাতায় যাবার কথা থাকলেও ডাবিং শেষ পর্যন্ত ঢাকাতেই হয়ে যায়। রাইসুল ইসলাম আসাদ অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘কালের পুতুল’। শিগগিরই তিনি ডাবিং করবেন ‘অবতার’ সিনেমার।
বিস্তৃত ক্যারিয়ার নিয়ে রাইসুল ইসলাম আসাদ
দেশ স্বাধীনের পরপরই মূলত ১৯৭২ সালে মঞ্চে ও টেলিভিশনে রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয়। তবে চলচ্চিত্রে তার সম্পৃক্ততা ঘটে ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর ১৯৮০ সালে সালাহ উদ্দীন জাকী’র ‘ঘুড্ডি’, ১৯৮১ সালে সৈয়দ হাসান ইমামের ‘লাল সবুজের পালা’, ১৯৮৪ সালে কাজল আরেফিনের ‘সুরুজ মিঞা’ সহ ‘মানে না মানা’, ‘নয়নের আলো’ ‘নতুন বউ’, ‘রাজবাড়ি’, ‘মীমাংসা’, ‘আয়না বিবির পালা’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘অন্য জীবন’, ‘লালন’, ‘লালসালু’, ‘ঘানি’, ‘মৃত্তিকা মায়া’সহ ৫০টির অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে মুগ্ধ করেছেন এদেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শককে। চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এখন পর্যন্ত তিনি ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘অন্য জীবন’, ‘লালসালু’, ‘দুখাই’, ‘ঘানি’ ও ‘মৃত্তিকামায়া’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি এই সম্মাননা লাভ করেন।