মইনুল-কনকের ভালোবাসার ৩৫ বছর

0

পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, বোঝাপড়া আর ধৈর্য্যের মধ্য দিয়ে সংসার জীবন হয়ে উঠে সুখের আনন্দের, যেন তারই প্রমাণ মেলে মইনুল ইসলাম খান ও কনকচাঁপার সংসারে। ভালোবাসায় ভরপুর এই সংসারের বয়স প্রায় ৩৫ বছর। কনক চাঁপার কাছে বাবা মায়ের একজন মইনুল’ই হচ্ছেন তার পৃথিবী। এই পৃথিবীতেই তিনি তার দুই সন্তান, দুই নাতি নাতনীকে নিয়ে সুখের স্বর্গ গড়েছেন। বাংলাদেশের শ্রোতা দর্শকের কাছে কনকচাঁপা এক আরাধ্য সঙ্গীতশিল্পীর নাম। সেই কনক চাঁপার অনুপ্রেরণা তার স্বামী মইনুল ইসলাম খান।

“তাকে পেয়ে আমি ৯৯.৯৯ ভাগ সুখী…”

নিজের জীবনে এই মহান মানুষটির ভূমিকা প্রসঙ্গে কনক চাঁপা বলেন,‘ স্বামীর ভালোবাসা, প্রেম একটি সুন্দর সংসার গড়ে তোলার জন্য খুব প্রয়োজন। একটি সুখী দম্পতি তখনই সফল যখন তারা নিজে সুখে থেকে তাদের চারপাশ ভালো রাখে। আমাদের দু’জনের মধ্যেই সেই চেষ্টাটা আছে। আছে আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা, বিশ্বাস আর ধৈর্য্য। আমরা দু’জনই একই পেশার মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে নেই কোন ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব। আমার জন্য কখনো তিনি এক পা এগিয়ে এলে, আমি তার চেয়ে বেশি পা ফেলে হাতে হাত রেখে এগিয়ে গিয়েছি। আমার জীবনে তাকে পেয়ে আমি ৯৯.৯৯ ভাগ সুখী। .০১ ভাগ কেন বাকি, সেটাও বলি। আমার প্রিয় ফুল বেলী। কিন্তু তিনি আমাকে সেটা প্রায়ই ভুলে যান। চাইলেই তিনি নানানভাবে মনে রেখে আমার জন্য বেলী ফুল নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু সেই নানান রকমে মনে রাখার চেষ্টাটা করেন না। নিয়মিতই তা ভুলে যান। এই যে তার সহজ সরল স্বাভাবিক ভুলে যাওয়া, ফুল আনার জন্য চাতুরী না করা, এটাই আমাকে মুগ্ধ করে। তাই পরিশেষে আমাকে বলতেই হয় তাকে পেয়ে আমি শতভাগ সুখী।’
কনকচাঁপা আরো বলেন, ‘স্টেজ শোর সময় অনেকেই স্টেজ কে ছুঁয়ে স্টেজ এ উঠেন। অবশ্যই সেটা যার যার ভালোলাগার বিষয়। আমিও স্টেজ এ উঠার আগে স্টেজ’র প্রতি সম্মান নিইে স্টেজ-এ উঠি। কিন্তু আমি সবসময়ই আমার স্বামীকে সালাম করে স্টেজ-এ উঠি। কারণ আমার কাছে তিনিই আমার সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধার জায়গা।’

তার সাফল্যই আমার সাফল্য

কনকচাঁপা প্রসঙ্গে মইনুল ইসলাম খান বলেন,‘কনক আমার জীবনে শতভাগ পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে। দু’জন একই পেশার মানুষ হয়ে ৩৫টি বছর সুখে শান্তিতে একই ছাদের নীচে বসবাস করা কোন সহজ কথা নয়। আমি আমার সঙ্গীত জীবনে অনেক সেক্রিফাইস করেছি। আমার যখন আমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা, তখন তার সাফল্যের জন্য সময় দিয়েছি আমি। আমি চাইলেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারতাম। কিন্তু আমি নিজের কথা না ভেবে শুধুই কনকের কথা ভেবেছি। কারণ সে আমার অর্ধাঙ্গিনী। তার সাফল্যই আমার সাফল্য। কনক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বেশ কয়েকবার। তা আমার জন্য অনেক আনন্দ বয়ে নিয়ে এসেছে। আমি শিল্পী কনকচাঁপা এবং ব্যক্তি কনকচাঁপাকে অনেক সম্মান করি।’

ছবি: মোহসীন আহমেদ কাওছার

আরও পড়ুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।